জাতীয় পতাকার আদলে ধানক্ষেত তৈরি করেছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার কৃষক আবু জাফর সাদিক। আবু জাফরের বাকরের হাট এলাকার পূর্ব দিকে উলিপুরগামি সড়কের পাশে ধানের জমিতে এমন চিত্র দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন। কৃষক আবু জাফর সাদিকের উপজেলার পৌরসভার পূর্ব নাওডাঙ্গা বাকরের হাট এলাকার আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে। আবু জাফর কৃষি কাজের পাশাপাশি উলিপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। সরেজমিনে দেখা গেছে,জমিতে ধান গাছ দিয়ে তৈরি করা জাতীয় পতাকার চতুর্ভুজের বেশিরভাগ জায়গা জুরে বিরি-১০২,১০৪ ও ১০৫ জাতের সবুজ রঙের ধান ১ একর ৩০ শতক জমিতে লাগানো হয়েছে। তার মধ্যে একই জমিতে সড়কের পাশে প্রায় এক শতক জমিতে জাতীয় পতাকার বৃত্ত তৈরি করা হয়েছে জিঙ্ক সমৃদ্ধ বেগুনি রংয়ের ধান গাছ দিয়ে। পতাকার খুঁটিতেও ব্যবহার করা হয়েছে জিঙ্ক সমৃদ্ধ বেগুনি রঙের ধান গাছ। এরপর পতাকার অংশটুকু নজরকাড়া ও দৃশ্যমান রাখতে পুরো জমিতে সবুজ রঙের ধান রোপণ করা হয়েছে। স্বাধীনতার মাসে জাতীয় পতাকা দৃশ্যমান হওয়ায় অনেকেই তা দেখতে আসছেন। ছবি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আবু জাফর সাদিক জানান,আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি নিয়মিত কৃষিকাজ করে আসছি। দেশের প্রতি ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে মাথায় ভিন্নধর্মী চিন্তা আসে। এখন স্বাধীনতার মাস, বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে অনুষ্ঠান করে জাতীয় ভাবে স্বাধীনতা দিবসটি পালন করবেন। একজন সফল কৃষক হিসেবে এই মাসটি আমার কাছে মর্যাদাপূর্ণ ও গৌরবের। তাই ধানক্ষেত জাতীয় পতাকার আদলে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি। মাঠটি সড়কের পাশে হওয়ায় দূর থেকে দেখে দেশের প্রতি মানুষের মমত্ববোধের জাগ্রত হবে,একটু হলেও হৃদয়ে দোলা দেবে। সে কারণেই জমিতে ধান গাছের চারা দিয়ে জাতীয় পতাকা তৈরি করেছি। যা প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থীরা দেখতে আসেন। অনেকেই আমার এ চিন্তা চেতনাকে ধন্যবাদও জানাচ্ছেন। দেশ ও জাতীয় পতাকার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশেই এই আয়োজন বলে জানান তিনি। জাতীয় পতাকা দেখতে আসা এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম (৪৫), রফিকুল ইসলাম (৩০),মাহমুদুল হাসান (৪২), মামুনুর রশীদ (৩২), মনজু সরকার (৩৫) ও তোফাজ্জল মিয়া (৫০) সহ আরও অনেকে বলেন,আবু জাফর সাদিক দেশের প্রতি ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে জমিতে ধানের চারা দিয়ে জাতীয় পতাকা তৈরি করেছেন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তার এ চিন্তা চেতনাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। কৃষক আবু জাফরের এমন কর্মের প্রশংসা করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মো মোশারফ হোসেন বলেন,একজন কৃষক দেশের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে তার জমিতে জাতীয় পতাকার আদলে শস্যচিত্র ফুটিয়ে তুলে সত্যিই প্রশংসার কাজ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।